My Blog List

Thursday, July 13, 2017

১৯৭১ সালের ৩ অক্টোবর। চারজন দলছুট মুক্তিযোদ্ধা

প্রতাপ কামাল
এক
১৯৭১ সালের ৩ অক্টোবর। চারজন দলছুট মুক্তিযোদ্ধা নড়াইল-লোহাগড়া পাঁকা রাস্তা পাড় হয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে যাবে। নড়াইল লোহাগড়া রাস্তা বেশ উঁচু। রাস্তার উত্তরে এবং দক্ষিণে উভয় দিকে তিনশ থেকে চারশ গজের মত ধান, পাটের ক্ষেত। বর্ষার পানিতে ডুবে গিয়েছিল। এখন পানি কমে এসেছে। কম বেশি হাটুপানি হবে। পানির মধ্যে অসংখ্য চিকন চিকন শাপলার লতা পানির উপরে ছোট ছোট পাতা মেলে দাড়িয়ে আছে।
উত্তর দিকে ধুড়ে এবং জঙ্গল গ্রাম। রাস্তার দক্ষিণে রামচন্দ্রপুর। রাস্তার উপরে আঠারো বিশজন রাজাকারের একটি দল। পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে টহল দিচ্ছে, একবার যাচ্ছে, আর এক বার আসছে। প্রত্যেকের ঘাড়ে একটি করে থ্রি নট থ্রি রাইফেল।
টহলের কারণ হল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বীরত্বপূর্ন কাজ। মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে পাক সেনারা এই রাস্তা ধরে নড়াইল লোহাগড়া যাতায়াত করতো এবং রাস্তার দু’পাশে বিভিন্ন গ্রামে অগ্নি সংযোগ করে লুটপাট করতো। রাজাকার বাহিনী তৈরী হবার পর উপদ্রপ আরো বেড়ে গেল। তাই বর্ষার পানি বেড়ে যাওয়ার পর তিনটি গ্র“পের মুক্তিযোদ্ধারা যুক্তি করে কাশিপুর পয়েন্টে রাস্তাটি কেটে দিয়েছিল। চার-পাঁচ হাত কাটা রাস্তা, পানির তোড়ে বিশাল এক খালে পরিণত হল। উত্তর দিকের পানির চাপে এই খালে এখন প্রচন্ড স্রোত এবং পানিতে জায়গায় জায়গায় প্রচন্ড ঘূর্ণিপাক। দেখলে ভয় পাওয়ার মত।
ফলে পাক সেনা ও রাজাকারদের গাড়ী নিয়ে সরাসরি লোহাগড়া যাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। তারা এখন নৌকায় করে কাটা যায়গা থেকে দুর দিয়ে দুর দিয়ে, এক পার থেকে আরেক পারে যাতায়াত করে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নৌকায় উঠতে ভয় পায় বলে কোন রকমে একটি বাঁশের সাকো তৈরী হয়েছে। সেখানে রাজাকাররা সব সময় পাহারায় থাকে।
নড়াইল লোহাগড়া রাস্তায় বড় ব্রিজটি হ’ল হ্ওাইখালীতে। মুক্তিযোদ্ধারা রাস্তাা কাটার পর সেখানেও পাহারা বসানো হয়েছে। সেখানেও রাজাকারদের পাহারা। পাহারায় থাকা রাজাকাররা আবার মাঝে মাঝে রাস্তায় টহল দিতে থাকে।
মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামের প্রান্তে আসতে আসতে ফজরের আজান হয়ে গেল। চারদিক ফর্সা হয়ে আসছে, পানি এবং রাস্তা পার হতে হবে। রাস্তার ওপারেও পানি কাদার ভিতর দিয়ে যেতে হবে। কিন্তু পানির গভীরতা কম, সমতল ভূমি। রাস্তা থেকে পানির শেষ মাথা পর্যন্ত দেখা যায়। কেবল রাস্তার পাশ দিয়ে কিছু আকন্দ গাছ এবং কাশ বনের ঝোপ।
মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সময় নেই। যেটুকু আফসা অন্ধকার তার মধ্যেই হয় রাস্তা পার হতে হবে, না হয় আবার পিছন দিকে ফিরে যেতে হবে। ভাবার সময় নাই। আবার রাস্তার ঐপারে যাওয়াটাও অসম্ভব জরুরী।
মুক্তিযোদ্ধারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল, যে ভাবেই হোক রাস্তা পার হতে হবে। সিদ্ধান্ত হল নাক ডুবিয়ে পানির ভিতর দিয়ে ধান পাটের ক্ষেত পার হতে হবে এবং টহল দলকে অপ্রস্তুত অবস্থায় গুলি চালিয়ে ধাওয়া করতে হবে। ওরা ঘাড়ের রাইফেল নামিয়ে, রাইফেলের চেম্বারে গুলি ঢুকিয়ে, শুট করতে যে সময় নেবে, তার মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধারা রাস্তা পার হয়ে যাবে। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা অনুমান করলো যে, গোলাগুলি শুরু হতেই অপ্রস্তুত রাজাকাররা হয় ভয়ে পালিয়ে যাবে, না হয় নিরাপত্তার জন্য মাটিতে শুয়ে পজিশন নিবে। যে কথা সেই  কাজ। চারজন মুক্তিযোদ্ধা পানি পার হয়ে রাস্তার ধারে আকন্দ গাছের আড়ালে অবস্থান নিল।
রাজাকাররা তখন পূব থেকে পশ্চিম দিকে গেল। মুক্তিযোদ্ধারা অপেক্ষায় থাকলো। কিছুক্ষণ পর রাজাকাররা আবার পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ফিরলো। কাছে আসতেই চার মুক্তিযোদ্ধা একটি ষ্টেনগান, একটি চাইনিজ রাইফেল এবং দুটি এসএলআর থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে চিৎকার দিয়ে রাজাকারদের উপর ঝাপিয়ে পড়লো। তবে সরাসরি রাজাকারদের গুলি না করে গুলি উপরের দিকে ছুড়তে লাগলো।
কিন্তু সমস্যা দেখা দিল। মুক্তিযোদ্ধাদের চিন্তা এবং পরিকল্পনা মত, রাজাকাররা মাটিতে শুয়ে পড়লো না, পজিশনও নিল না। তারা কেউ কেউ অস্ত্র ফেলে এবং কেউ কেউ অস্ত্র ঘাড়ে ঝুলানো অবস্থায় হাত দিয়ে চেপে ধরে পশ্চিম দিকে দৌড় শুরু করলো। এখন মুক্তিযোদ্ধারা সমস্যায় প’ড়লো। এই অবস্থায় রাস্তা ছেড়ে পানিতে নামলেই রাজাকাররা তাদের গুলি করবে। ওদিকে রাজাকাররা সারেন্ডারও করছে না। আবার মুক্তিযোদ্ধারা যদি রাজাকারদের পিছু ধাওয়া না করে উল্টা দিকে দৌড় দেয় কিংবা দাড়িয়ে পরে তাহলেও রাজাকাররা পাল্টা গুলি চালাবে। এই রকম একটি পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধারা নিরুপায় হয়ে গুলি এবং ধাওয়া অব্যাহত রাখলো।
কিন্তু ধাওয়া করে পশ্চিম দিকে বেশি দূর যাওয়া যাবে না। কারণ নড়াইল বেশি দূরে নয়। সেখান থেকে পাকসেনাদের গাড়ী বা অতিরিক্ত রাজাকার চলে আসতে পারে। মাইল দেড়েক দৌড়ানোর পর কিছু রাজাকার রাস্তা ছেড়ে গ্রামে ঢুকে পড়লো, বিশেষ করে যারা খালি হাতে ছিল। তাদের আবার অন্য ভয় আছে। গ্রামের লোক রাজাকার হাতে পেলে রাম ধোলাই দিতে পারে। দাবড় খেয়ে বেশীর ভাগ রাজাকার হ্ওাইখালী ব্রিজ থেকে নীচে পানিতে ঝাপ দিয়ে স্রোতে ভেসে উত্তর দিকে চলে গেল। মাত্র চার পাঁচ জন রাজাকার তখনো রাস্তা বরাবর পশ্চিম দিকে দৌড়াচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারাও ক্লান্ত। তাদের গুলির পরিমাণও কমে এসেছে (যদিও দূরের যাত্রায় পর্যাপ্ত গুলি সাথে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল)। হঠাৎ করে অবশিষ্ট চার পাঁচ জন রাজাকার পাশের একটি পুকুরে ঝাপিয়ে পড়লো। মুক্তিযোদ্ধারা যখন পুকুরের পাড়ে গিয়ে পৌছালো তখন দুই জন রাজাকার বুক পানিতে দাড়িয়ে হিষ্ট্রিয়াগ্রস্থের মত অশ্রব্য ভাষায় গালি-গালাজ করছে। বাকি তিন জনের খবর নেই। মুক্তিযোদ্ধারা ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিয়ে, স্থান ত্যাগ করে আবার পূর্ব দিকে দৌড় শুরু করলো। ফেরার আগে একজন মুক্তিযোদ্ধা পানির মধ্যে দাড়িয়ে থাকা দুই রাজাকারের দিকে গুলি চালালো। তবে ফলাফল দেখার সুযোগ হল না।
রামচন্দ্রপুর গ্রামে এসে মুক্তিযোদ্ধারা পাকা রাস্তা ছেড়ে দিয়ে, দক্ষিণে সড়াতলা গ্রামের দিকে চলে গেল। তারপর সেখান থেকে বহু কষ্টে একটি নৌকা জোগাড় করে গন্তব্যে যাত্রা করলো।
দুই
১৯৭৩ সাল। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার। জুটমিলের কর্মচারী, শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা প্রগতিশীল মুক্তিযোদ্ধা জেলখানায়। ট্রেড ইউনিয়ন করার পাশাপাশি প্রগতিশীল রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় মুক্তিযোদ্ধাকে সেল-এ রাখা হয়েছে। যশোর জেলখানার পুরাতন সেল।
প্রতিদিন সকালে পুরাতন সেলে দরজা খুলে দেয়ার পর অনান্য বন্ধুদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাও হাটাহাটি করেন। জেলখানায় তখন গিজ গিজ করছে অসংখ্য রাজাকার। এছাড়া আছে জাসদ এবং গোপন বাম রাজনৈতিক দলের বহু কর্মী এবং সাধারণ অপরাধী। ধারণ ক্ষমতা ৫৭৫, বন্দীর সংখ্যা ২৮০০ এরও বেশি।
হাটাহাটি, মাঝে মাঝে দাবা খেলা এবং মানুষের সাথে গল্প সল্প করে সময় কাটে। যাদের সুযোগ আছে তারা লাইব্রেরী থেকে বই নিয়েও পড়তে পারে। গল্প সল্প ও কথাবার্তা অনেকের সাথে হয়। মাঝে মাঝে রাজাকারদের সাথেও হয়। তাছাড়া সেই সময় মুক্তিযোদ্ধা ও বাম রাজনীতির সাথে যারা যুক্ত, রাজাকাররা তাদের একটু সমীহ করেই চলতো। কারণ ১৯৭২-৭৩ দুই বছরে কিছু রাজাকার নেতা জেলখানার ভিতরে রাম ধোলাইর শিকার হয়েছিল।
তো এই রাজাকারদের মধ্যে একজন রাজাকারের গালের ডান পাশে বড় একটা ছিদ্র ছিল। ছিদ্রটা এত বড় যে তার মধ্যে এক সাথে তিনটা আঙ্গুল ঢুকিয়ে দেয়া যায়। গালের মধ্যে জিহ্বা মাড়ি সব দেখা যায়। তার গালে সাকুল্যে বাম পাশের মাড়িতে উপর নীচে পাঁচ ছয়টি এবং সামনে ডান দিকে গোটা চারেক দাঁত আছে, আর কোন দাঁত নাই।
মুক্তিযোদ্ধা অনেকবার ভেবেছেন লোকটাকে জিজ্ঞেস করবেন, তার কি হয়েছিল। কিন্তু একটি লোকের শরীরের খুত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা অনেকটা অশোভনীয় মনে করে মুক্তিযোদ্ধা অনেকদিন তাকে কিছু জিজ্ঞেস করেন নি। শেষে একদিন তার কাছে জানতে চাইলেন যে, তার কি হয়েছিল। রাজাকার মাথা নিচু করে বিড়বিড় করে বলেছিল, “ভাই, এটা আপনাদেরই দান। আপনারা পুকুর পাড় থেকে পানির মধ্যে যখন আমাদের গুলি করেন, তখন একটি গুলি আমার ডান চোয়ালে আঘাত করে ভেতরে ঢুকে মনে হয় দাঁতে গুতো খেয়েছিল। গুলিটা সোজা বাম গাল দিয়ে বের না হয়ে সামনের দিকে বের হয়ে যায়। যাবার সময় আমার এই অল্প কয়েকটি দাঁত ছাড়া বাকি সব গুলো দাঁত নিয়ে গেছে। গ্রামের লোকেরা ধরাধরি করে আমাকে নড়াইল হাসপাতারে নিয়ে গিয়েছিল বলে এখনো পরানে বেঁচে আছি”। রাজাকার মাথা নীচু করে মিটিমিটি হাসতে হাসতে বললো, “ভাই কোন আফসোস নাই। জানে বেঁচে আছি সেটাই বড় কথা”
মুক্তিযোদ্ধার মনে পড়লো পুকুর পাড় থেকে ফিরে আসার মুহুর্তে একজন সহযোদ্ধা বুক পানিতে দাড়িয়ে থাকা দুই রাজাকারের দিকে গুলি ছুড়েছিল।
আলাপে রাজাকার লোকটি বলেছিল তার বাড়ী লোহাগাড়া থানার বেলগাছা গোপিকান্তপুর (রূপক) গ্রামে এবং তার নাম মোখলেছ (রূপক)।

চার ভয়ংকর কিশোর মুক্তিযোদ্ধা


বেয়াইপ্রজাতন্ত্র এবং একজন প্রবীর সিকদার



প্রবীর সিকদারকে জেলহাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ দশ দিনের রিমান্ড চাইলে সেই আবেদনের শুনানীর তারিখ নির্ধারণ করে তাঁকে জেলে পাঠান আদালত। আজ এই শুনানী হবে।
ইতোমধ্যে অনলাইনচারী সবাই প্রবীর সিকদারকে চিনে ফেলার কথা। ১৬ আগস্ট তাকে আটক করেছে ঢাকার ডিবি পুলিশ। আটক করার কয়েক ঘন্টা পর ফরিদপুরে দায়ের করা হয় মামলা। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আটক হওয়া সাংবাদিক প্রবীর ফেসবুক স্টেটাসের মাধ্যমে মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের সম্মানহানি করেছেন! এখানে লক্ষণীয় হলো, আমাদের দেশে যখন মামলা করেও আসামি গ্রেপ্তার করানো যায় না, যখন প্রকাশ্যে ব্লগাররা খুন হবার পরও খুনিদের না ধরে উল্টো ব্লগারদেরই দোষ খোঁজা হয়, ঠিক সেই সময়ে আগেভাগে আসামি আটক করে মামলা দায়ের একটি অভিনব ঘটনা।
প্রবীর সিকদার কে? তিনি একজন সাংবাদিক, এই তার পরিচয়। কিন্তু এসব ছাড়িয়ে গেছে যুদ্ধাপরাধ নিয়ে প্রবীরের আপোসহীন কর্মকাণ্ড। ব্যক্তিজীবনে তিনি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বাবাসহ পরিবারের ১৪ জনকে হারিয়েছেন প্রবীর। এমন একজন মানুষ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ হয়ে কথা বলবেন এটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই। টানা সেনাশাসন, জামায়াত-বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সময়ে যে কয়জন হাতেগোনা মানুষ যুদ্ধাপরাধ এবং অপরাধী নিয়ে বড় গলায় কথা বলেছেন, প্রবীর তাদের একজন। ফরিদপুরের মতো ছোট এক শহরে থেকেও তাই তিনি পরিচিত হয়ে উঠেন পুরো দেশে। মুসা বিন শমসের নামের আড়ালে যে এক কুখ্যাত রাজাকার নুলা মুসা লুকিয়ে আছে এই তথ্যটি সবার সামনে নিয়ে এসেছিলেন প্রবীর সিকদার। কিংবা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ নামে টিভিতে ধর্মের বুলি আওড়ানো ভণ্ডটা আদতে বাচ্চু রাজাকার ছাড়া আর কেউ নয়, সেই সত্যটাও দেশের মানুষ জেনেছে উনার মাধ্যমে।
নুলা মুসা আর নুলা নাই। সে এখন আন্তর্জাতিক কেউকেটা। দুই টাকার কলম পেষা সাংবাদিককে সে সহ্য করবে কেন? তাই ২০০১ সালেই আক্রান্ত হন প্রবীর। বোমার আঘাতে হারান একটি পা। একটি হাতের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতাও নষ্ট হয়ে যায়। তখন ক্ষমতায় ছিলো আওয়ামীলীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সহায়তায় বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে কৃত্রিম পা সংযোজন করেন প্রবীর সিকদার। কিন্তু নিজের শহর ফরিদপুরে আর ফেরা হয়নি। ঢাকাতেই থাকছেন গত ১৫ বছর ধরে। নিজের কাজ করে যাচ্ছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবিতে সোচ্চার আছেন। প্রতিদিন জ্যামিতিকহারে ক্ষমতাবান হতে থাকা মুসার বিরুদ্ধে, রাজাকারপুত্র এবং বর্তমান সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেনের নানা অপকর্ম নিয়ে খবর প্রকাশ করছিলেন। উল্লেখ্য মোশাররফ হোসেন ফরিদপুর থেকে নির্বাচিত সংসদসদস্য। এই মন্ত্রী ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার খোন্দকার নুরুল হোসেনের (নুরু রাজাকার) পুত্র। নিজে রাজাকার না হলেও মন্ত্রী হবার পর থেকেই পিতৃঋণ পরিশোধ করে চলেছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি-জমি দখল থেকে শুরু করে নানা প্রতিষ্ঠানে নিজের রাজাকার বাবার নাম সেঁটে দিচ্ছেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই এসবের প্রতিবাদ করছিলেন প্রবীর। পাচ্ছিলেন হুমকি। কিন্তু যে মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে পরিবারের ১৪ জনকে হারিয়েছেন, রাজাকারদের মুখোশ খুলে দিতে গিয়ে যে মানুষটা পঙ্গু হয়েছেন, তাকে তো আর হুমকি দিয়ে আটকানো যাবে না। যায়ও নি।

নুরু রাজাকারের নামে ফরিদপুরে রাস্তার নামকরণ হয়েছে
হুমকি পেয়ে প্রবীর সিকদার থানায় গিয়েছেন, অভিযোগ জানাতে গিয়ে ফিরে এসেছেন। পুলিশ সে অভিযোগ নেয়নি। সেই কথা তিনি ফেসবুক স্টেটাসে জানিয়েছিলেন। সেই স্টেটাসে উল্লেখ করেছেন, তার যদি কিছু হয় তাহলে এর জন্য মন্ত্রী খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, রাজাকার নুলা মুসা ওরফে মুসা বিন শমসের এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক বাচ্চু রাজাকার ওরফে আবুল কালাম আজাদ দায়ি থাকবে।
১৬ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকায় প্রবীর সিকদারের অফিস থেকে সেই বিষয়ে কথা বলার জন্যই থানায় তুলে নিয়ে গিয়েছিলো পুলিশ। অন্তত তাই বলেছিলো তারা। পরে আর থানায় যায়নি, গিয়েছে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে। মধ্যরাত পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তিনি।
প্রবীর সিকদারের একটি পা নেই। তিনি বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে বা একঠায় বসে থাকতে পারেন না। এই তথ্য জানিয়ে বাবার জন্য একটু ভালো বসার জায়গা চেয়েছিলেন সুপ্রিয় সিকদার। যাতে মাঝে মাঝে তিনি গা এলিয়ে দিতে পারেন। দেয়া হয়নি। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে টানাহ্যাচড়ার মধ্যে থাকা প্রবীরকে মধ্যরাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ফরিদপুরে। সকালে কোর্টে নিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আদালত যার ফয়সালা করবেন আজ।

কুখ্যাত রাজাকার, দণ্ডপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামীকে ছাতা মাথায় জামাই আদরে নেওয়া হয়, আর শহীদপুত্র, বেয়াই অপমানের মামলায় অভিযুক্ত প্রবীর সিকদারের আহত হাতে থাকে হাতকড়া
বেয়াইপ্রজাতন্ত্রী দেশ
ইঞ্জিনিয়ার খোন্দকার মোশাররফ হোসেন সম্ভবত বাংলাদেশের প্রথম কোনো রাজনৈতিক সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, যিনি দলের কোনো পদে নেই। যার সাথে সারা দেশের আওয়ামীলীগ কর্মীদের যোগাযোগ থাকা তো দূরের কথা, নিজের জেলার আওয়ামীলীগের সাথেই কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ শান্তিকমিটির সদস্য, নুরু রাজাকারের ছেলে খোন্দকার মোশাররফকে ধারণ করার জন্য ফরিদপুর আওয়ামীলীগ রাজি ছিলো না কখনো। কিন্তু দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজের এই তুতো ভাইকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে কঠিন শপথ নিয়েছিলেন। আর সবচে বড় কথা হলো পুরনো সম্পর্ক ছাপিয়ে উঠেছিলো নতুন সম্পর্ক। খোন্দকার সাহেব প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই হন যে! একমাত্র কন্যা সায়মা ওয়াজেদের শশুর হলেন এই মন্ত্রী।
মুসা বিন শমসের। বিতর্কিত এই ব্যবসায়ী এবং রাজাকারও শেখ পরিবারের পরমাত্মীয়। আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী শেখ সেলিমের বেয়াই! শেখ সেলিমের আরেক বেয়াইও বিখ্যাত মানুষ। বিএনপি-জামায়াত সরকারের বিদ্যুত মন্ত্রী ইকবাল হাসান টুকু।
অবাধ্য প্রবীর সিকদার এই দুই বেয়াই-এর বিরুদ্ধেই একের পর এক নিউজ করে যাচ্ছিলেন। সর্বশেষ ফেইসবুকে স্টেটাস দিয়ে সর্বনাশের ষোলকলা পূর্ণ করলেন।
বেয়াই বিষয়ে আরো দু একটা তথ্য দেওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রীর চাচাত ভাই শেখ হেলাল। তিনি দলীয় এমপিও। সোহেল তাজ এর মন্ত্রীত্ব ছাড়ার পেছনে যাকে দায়ি করা হয়। এই শেখ হেলালের বেয়াই হলেন, পতিত স্বৈরশাসক এরশাদের চোর ক্যাশিয়ার নাজিউর রহমান মঞ্জু। জি, ঠিক ধরেছেন, ব্লগারদেরকে প্রকাশ্যে পেটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন যিনি, যিনি এই সেদিন আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে পেটানো জায়েজ বলে ফতোয়া দিয়েছেন, যিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের অন্যতম শরীক বিজেপির চেয়ারম্যান, সেই আন্দালিভ রহমান পার্থ জাতীর পিতার নাতিন জামাই হন! এরকম বেয়াই আরো খুঁজে বের করা যাবে।
উচ্চ ভাসুরের নাম নিতে মানা
আর কয়েক ঘন্টার মধ্যে প্রবীর সিকদারকে আদালতে নেয়া হবে। ফরিদপুরের কোনো আইনজীবী প্রবীরকে আইনি সহায়তা দেবেন না। স্বপন কুমার পাল নামের যে আওয়ামী উকিল মামলা করেছেন, তিনি আবার ফরিদপুর বারের আইনজীবী। নিজেদের উকিলের দায়ের করা মামলায় সেই বারের উকিলরা মামলা লড়েন না! এরপরেও কেউ কেউ প্রবীর সিকদারের পক্ষে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। ক্ষমতাধর মন্ত্রীর চ্যালারা তাতেও বাধা দিয়েছে। আইন ও সালিসকেন্দ্র আইনজীবী পাঠাবে বলেছে। দেখা যাক কী হয়। ভয়ঙ্কর সিকদারকে আদালত কতদিনের জন্য রিমান্ডে পাঠান দেখার বিষয়।
ইদানীং নানা বিষয়ে ফতোয়া দেখা যায়। স্বপ্রণোদিত হয়েও মাঝে মাঝে ফতোয়া আসে। কিন্তু কেনো যেন প্রবীর টাইপ বিষয় তাঁরা দেখেন না। আমরাও ভয়ে কথা বলি না। কখন আবার কোন বিপদে পড়ি। “উচ্চ ভাসুরের নাম” মুখে নিতে তো মানা আছে।
কাক কাকের মাংস খায় না
একবার শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলাম জরিপ করতে। জামায়াতের আব্দুর রবকে সেখানকার ভিসি করার পাঁয়তারা চলছিলো। এটা নিয়ে প্রশ্ন করছিলাম কয়েকজন মিলে। হঠাৎ সেখানে উদয় হলো ইত্তেফাকের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নুরুল আমিন। সে ডেকে নিয়ে আসলো শিবিরের চ্যলা চামুণ্ডা। জোর করে কাজ করা যেত, কিন্তু অফিস সেটা চাইলো না। সিলেটে ইত্তেফাকের নিজস্ব প্রতিবেদক ছিলেন আব্দুল মালিক চৌধুরী। নির্বিরোধী মানুষ। টেক্সটবুক ধরে রিপোর্ট লিখেন। লাশ দেখেন ১০টা, ডিসিকে জিজ্ঞেস করলে জানা যায় ৮টা লাশ। তিনি খবরে ৮টা লিখেই পাঠিয়ে দেন! তো সেই মালিক ভাইকে আমাদের সম্পাদক ফোন করে বল্লেন পুরো ঘটনা। তিনি আবার একটু গুন্ডা প্রকৃতির সম্পাদক, বল্লেন নুরুল আমিনকে শহরে দেখলেই পেটাবেন! মালিক ভাই হায় হায় করে উঠলেন, না না, এটা করতে হয় না। কাক কখনো কাকের মাংস খায় না...!
হ্যা, কাক কখনো কাকের মাংস খায়না। মিথ্যাচারের বরপুত্র মাহমুদুর রহমানকে আটক করার পর সেই সত্যতা পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের সব বড় বড় সাংবাদিক এর প্রতিবাদ করে বিবৃতি দিয়েছে। এখনও দেয়। কিন্তু প্রবীর সিকদারের বিষয়ে অল কোয়ায়েট অন দ্যা সাম্বাদিক ফ্রন্ট! সম্ভবত প্রবীর সিকদার ভালো কাক হয়ে উঠতে পারেন নি।
এবং ৫৭

৫৭ ধারা
 নিয়ে আলোচনা চলছে ২০১৩ থেকে। নতুন করে যুক্ত হতে চলেছে “সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০১৫”। ৫৭ ধারা বাতিলের দাবি করছেন মুক্ত মত প্রকাশের পক্ষের মানুষেরা। বাংলাদেশে আরেকটি ধারা কিন্তু আছে। সেটা হলো ৫৪ ধারা। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে এই ধারাটি কার্যকর। রাষ্ট্রযন্ত্র ইচ্ছামতো এই ধারার ব্যবহার করেছে। সেখানে ৫৭ কিংবা সাইবার নিরাপত্তা আইন নতুন পালক হিসাবেই যুক্ত হয়েছে। আর কিছু নয়। তো এই আইন বাতিল করলে আসলে কোনো লাভ নাই। রাষ্ট্রযন্ত্র ঠিকই আপনাকে আটক করতে পারবে, লটকে দিতে পারবে যদি চায়। শাসকের মাথার ভেতর থেকে ৫৪, ৫৭ নামের ধারাগুলো যতদিন বিলুপ্ত না হবে, যতদিন বেয়াইপ্রজাতন্ত্রী থেকে প্রকৃত গণপ্রজাতন্ত্রী দেশ গড়ে না উঠবে ততদিন “আকাশের যত তারা পুলিশের তত ধারা” মেনে নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে।
প্রথম ছবিটি সাংবাদিক উজ্জ্বল দাশ এবং দ্বিতীয়টি ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটনের ফেসবুক পোস্ট থেকে।

রক্তচাপ! উচ্চ রক্তচাপ...

মেয়েটা নতুন। কুশল জিজ্ঞেস করে বল্ল, আপনার প্রেশার মাপতে হবে এখন, এরপর রক্ত পরীক্ষা করবো। এসবের জন্য ৩ ঘন্টা আগে থেকে খাবার বন্ধ রাখতে হয়, সেটা জানেন? আমি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লাম। সকালের ওষুধ নিয়েছেন? বল্লাম, হ্যাঁ।
হাতে প্রেশার মাপার যন্ত্রটা পরাতে পরাতে জিজ্ঞেস করলো, ইনজেকশনে ভয় পান? আমি কিন্তু খুব এক্সপার্ট। বুঝতেই পারবেন না। একটা কাষ্ঠ হাসি দিলাম। চমৎকার করে হেসে নিয়ে এবার বল্লো, আপনি যদি হিন্দি জানেন, সেটা বলতে পারেন, আমি ভালো বলতে পারি না, কিন্তু বুঝি! উত্তরে বল্লাম, আমি ইন্ডিয়ান নই, বাংলাদেশের। একটু অপ্রস্তুত হয়েই সামলে নিলো। দু:খিত, আসলে এখানেতো অনেক বেশী ভারতীয় তাই ভেবেছিলাম। আর আপনার রেকর্ডটাও এখনও দেখতে পারিনি আমি।
মেয়েটার চোখ কুঁচকে যায়, চেহারায় একটা বিস্ময়ভাব ফুটে উঠে। এরকম চেহারার সাথে আমার পরিচয় আছে। অনেকবার এমন হয়েছে। প্রথমবার হয়েছিলো স্কয়ার হাসপাতালে। সিমনের জন্য রক্ত দিতে গেছি। হাড্ডি তুড়নেওয়ালা কৈরি ডাক্তার সাথে। একজন নার্স প্রেশার মাপতে শুরু করলেন... কৈরি ডাক্তার জুনিয়র এক ডাক্তারকে পেয়ে গেজাতে শুরু করেছে। মেয়েটা একটু অস্বস্থি নিয়ে সেই পিচ্চি ডাক্তারকে ডাকলো। সে আসলো, চোখ মোটা করে একবার প্রেশারের কাটা দেখে আরেকবার দেখে আমাকে। কৈরি বল্ল, আবার মাপো... আরও একটু বেড়ে গেলো সম্ভবত! এরা ভাবলো রক্ত দিতে হবে বলে ভয় পেয়েছি! কী অপমান! কী অপমান! রক্ত দিয়ে টাকা নিলে এইখাতে ৩০/৩৫ হাজার টাকা ইনকাম করে ফেলতাম ততদিনে, আর আমারে বলে কীনা ভয় পেয়ে প্রেশার বেড়ে গেছে! ব্যাগ থেকে টান মেরে ডিসেম্বর মাসের কার্ডটা দেখালাম। তারা তবু রক্ত নেবেনা! কৈরি নানান রকমের মিঠা মিঠা কথা বলে। আমি বলি, আরে মিয়া আমার প্রেশার এমনই। সবসময় হাই থাকে। সে বল্ল, এটা ওখানকার ডাক্তারকে বুঝতে হবে! বসেই থাকলাম। মেজাজ খারাপের সাথে প্রেশার সম্ভবত আরো বাড়ছিলো। শেষমেষ কৈরি আমারে নিয়া হাসপাতাল থেকেই বের হয়ে আসলো। কিন্তু আর একা ছাড়ে না! কি সমস্যায় পড়লাম! ব্যাপক হাউকাউ করেও তারে ছাড়ানো গেলোনা, গাড়িতে করে ন’ বাড়িতে দিয়ে এলো। পুরা রাস্তায় ‘উৎফুল্ল’ করার প্রক্রিয়া হিসাবে নানা ইতং বিতং গল্প করলো। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। মেজাজ খারাপ করে নজ্রুলিস্লামের সোফায় শুয়ে থাকলাম। ও আমার আল্লা! সেইটাও বেশি সময় পারলাম না। সেলিনা বেগম তুলি তার চরিত্রের উল্টা ঘটনা ঘটায়া ফোন করে বসলো! মৃদু আর্তনাদসহ বল্লো,- ‘তুমার কিতা ওইছে?’ পুরা তব্দানুভূতিতে পড়ে গেলাম। যতই বলি, কুন্তা ওইছেনা, ঠিকাছি, ততই পেম বৃদ্ধি পায়! একটু প্রেশার বাড়ছে, রক্ত দেয়ার যন্ত্রপাতি দেখে ভুই পাইছি এই কথা বলে পার পেলাম। জিগাইলাম, প্রিয়তমা, তুমারে এই খবর কে দিছে? বল্লো, শাওন দিয়েছে। শাওনরে ফোন দিলাম, সে ঘসেটি বেগমের মতো হাসতে লাগলো। কৈরি নাকি ফেসবুকে স্টেটাস ঝেড়ে দিছে, সেইটা দেখে সে আমার কোমলপ্রাণ স্ত্রীকে দিয়ে একটু ডিস্টাপিং করালো!
তো এই হলো আমার প্রেশার বিষয়ক প্রাথমিক গল্প। এখন পর্যন্ত যতজন আমার হাতে ব্লাড প্রেশারের মেশিন লাগিয়েছে ততজনই তার লাইফের অন্যতম আজব বস্তু দেখার মতো করে দৃষ্টিপাত করেছে আমার দিকে। সেই অর্থে এই সদ্য তরুণী নার্স কিছুই না। সে প্রায় দৌড়ে ডাক্তারের কাছে গেলো। ফিরে এসে বল্ল, ডাক্তার একটু পরেই আপনাকে দেখবেন, মন শান্ত করে এখানে বসুন। মন অশান্ত করার কিছুই নাই। এসব অভ্যাস হয়ে গেছে। মিনিট বিশেক পরে ইন্টারকম বাজলো। ফোন রেখেই আবার প্রেশার চেক করলো। চেহারা দেখে বুঝলাম, মন-টন শান্ত রেখে কোন ফায়দা হয় নাই। পাশের রুমেই ডাক্তার। সেখানে গেলাম। ডাক্তার গত দেড় বছর থেকে আমাকে দেখছেন। নভেম্বর থেকে প্রতি সপ্তায় একবার। ইনি আবার প্রেশার মাপলেন, ১৫২/১০০। উপরেরটা কমছে, ২৫ নেমে এসেছে। কিন্তু নিচেরটায় সমস্যা। মাত্র ১০ কমেছে। আরও ৪ সপ্তা ওষুধ খেতে হবে, হাঁটতে হবে প্রতিদিন কমপক্ষে আধা ঘন্টা, লাল মাংশ খাওয়া একদম বন্ধ, লবন কম খেতে হবে। মুখস্থ ওষুধ-পথ্য। সাথে নতুন যেটা বল্লেন, সেটা হলো ৪ সপ্তা পরে যদি নিচেরটা ৯০ এর নিচে না নামে, ডাবল ডোজ করে দেবেন ওষুধ। বাধ্য আধা-বয়েসির মতো মাথা নাড়লাম।
বাবাইকে স্কুলে দিয়ে পাক্কা তিরিশ মিনিট জোরে জোরে হাঁটি। একদিন স্কুল থেকে বায়ে, আরেকদিন ডানে। দুপাশে দুটো পার্ক। দুটোই নদীর তীরে। ছোট্ট একটা নদী। বাঁধানো পাড়। স্বাস্থ্যসচেতন বুড়োদের দল সেখানে ভীড় করে থাকেন। মাঝে মাঝে তাবলীগের লোকজন। যিশুর পথে মানুষকে আহ্বান করেন তারা। প্রায় দু-মাস ধরে এরা দেখছেন। চেহারা পরিচিত হয়ে গেছে। মুচকি হাসি থেকে এখন হায়/ হ্যালো পর্যন্ত পৌঁছেছে। আজ ‘শুভ সকাল’ বল্লেন তাদের দুজন। একটা কাগজ এগিয়ে দিলেন। হাসি মুখে সেই কাগজ নিয়ে দৌড়াতে লাগলাম। আর দু সপ্তাহ আছে হাতে। এর ভেতর এসপার ওসপার কিছু না হলে ১০ মি.লি গিলতে হবে রোজ...দৌঁড়াই...
প্রাতঃকালে ইশ্বরের ভালোবাসা
পেলাম দুই সন্তানবতীর কাছে
তাদের বাড়ানো ভাঁজপত্রে,
ইশ্বর মুচকি হাসছেন,
একটা নবজাতক বৃক্ষে।
জীবন ধারণের জন্য ইশ্বরের
ভালোবাসার সাথে কাগুজে
নোটও লাগে। আমি দিনমজুর;
আমাকে হাঁটতে হবে। বায়বীয়
ভালোবাসা নিয়ে দৌড়াই...


স্বাদ

শুক্রবারের সকালটা বড় অলস। সারা সপ্তা'র ঘুম এসে যেনো চোখে ভর করে। বিছানা ছাড়তেই ইচ্ছে করেনা। কিন্তু তাহমিনার জন্য সেটা সম্ভব হয়না। নানা কাজ ঠিক করে রাখে সে শুক্রবারের জন্য। এম্নিতে সে নিজেই বাজার করে। ঘরের বিন্দু বিসর্গ সব কাজ নিজেই সামলায়। সেই অর্থে আসিফের আরামের জীবন।
সব শুক্রবারেইযে আসিফের জন্য কাজ রাখে তাহমিনা, তেমনটা নয়। কোন কোনদিন তার নিজেরই কাজ থাকে, বেরিয়ে যায়। কোনদিন হয়তো দেখা গেলো সেও পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে। ওদের একটা সামাজিক সংগঠনও আছে। তিন সপ্তা পরপর সেটার মিটিং থাকে। ওই শুক্রবারটা আসিফের সবচে প্রিয়। তাহমিনা সকালেই বেরিয়ে যায়। ফিরতে ফিরতে দুপুর গড়ায়। বিছানাটা আসিফের দখলে। কেউ নাই ডিস্টার্ব করার। আজ সেই শুক্রবার।
বেড সাইড টেবিল থেকে ঘড়িটা তুলে নিতে নিতে আসিফকে ডাকতে থাকে তাহমিনা, "শোন, আমি বেরুচ্ছি। তোমার নাশতা টেবিলে রেখে গেলাম, উঠে পড়ো। নয়তো ঠান্ডা হবে। আর শোন, ঘরে মাছ প্রায় শেষ, মুরগিও নাই। কটা মুরগি আর মাছ নিয়ে আসোনা বাবু আজ। প্লিজ প্লিজ..." তাহমিনা বলেই যায়। আসিফ শুধু হ্যাঁ-হুঁ করে। ওতে ক্ষতি নেই। তাহমিনা জানে ঘুমের ঘোরে শুনলেও আসিফ ঠিকই কাজটা করবে। সাথে টুকটাক সব্জি, মাছও নিয়ে আসবে। সে নিশ্চিত হয়ে বেরিয়ে যায়।
আসিফের প্রিয় রুমালি রুটি আজ। সাথে আলুর দম। রুটির সাথে মাংস খেতেই তার বেশি ভালো লাগে। কিন্তু ডাক্তারের সাথে তাহমিনার গভীর প্রণয়। প্রেশার একটু উপরের দিকে বলে এরা ষড়যন্ত্র করে ইদানিং তাকে মাংস খেতে দিচ্ছেনা। কিন্তু আসিফকে রুখে সাধ্য কার।
ফ্রিজ ভর্তি বাক্সো। রান্না করে করে বাক্সো ভর্তি করে ফ্রিজে রাখা তাহমিনার অভ্যাস। আসিফকে এখন এইসব বাক্সের ভিড় থেকে তার উদ্দিষ্ট বস্তু বের করতে হবে। টার্গেট সাধারণত মিস হয়না। কিন্তু তাহমিনাওতো বোকা না। সে জানে এইসব হবে। আসিফ একটা একটা করে বাক্স নামিয়ে টেবিলে রাখে। একটা ভাত ভর্তি বোল, ক্লিং ফিল্ম লাগানো দুটো বাটি। একটা চায়ের কাপে দুধের সর তুলে রাখা। আসিফের জিভে জল আসে, কিন্তু সামলে নেয়। বড় কিছুর জন্য, ছোট ছোট ত্যাগ স্বিকার করতে বলে গেছেন গুরুজনে। আজকের বিষয় রুমালি রুটি উইথ গোমাংশ। দুধের সর, তুমার জন্য কৃষ্ণ হবো অন্য ভোরে... এই বলে লোকেশন ঠিক রেখে রেখে বাক্সগুলো আবার আগের যায়গায় রেখে দেয় সে।
আহ্... কাহাতক আলুর দম গেলা যায় রোজ! স্বাদ না বদলালে কিসের জীবন? এজন্য অফিসে বসে সুযোগ মতো কাচ্চি বিরিয়ানি মেরে দেয় আসিফ। কিন্তু রুমালি রুটিতো বাড়ি-ঘর ছাড়া মেলেনা। তাই মাঝে সাঝে এমন কমান্ডো অভিযান চালাতে হয়।
বাজারে যেতে একদমই ইচ্ছা করছিলোনা। বিছানার মজা ছাড়তে ভালো লাগেনা। কিন্তু ঘড়ি দৌড়াচ্ছে। তাহমিনা আসার সময় হলো বলে। তাড়াহুড়া করে বেরিয়ে পড়তে হয়। তার আগে ঘরের চারপাশটায় চোখ বুলিয়ে নেয়। অনভ্যস্থ কিছু আছে কি না। টেবিলটা দেখে নেয় এক পলকে। ঝোল টোল পড়ে থাকলে সমস্যা। নাহ, সন্দেহ করার মতো তেমন কিছু নেই।
গাড়িতে উঠে জিজ্ঞেস করে, কোথায় নামিয়ে দিতে হবে তোমায়, নাকি সোজা তোমার বাসায়?- উদ্দেশ্যমূলক চোখ নাচায় আসিফ। "বদের মতো ইশারা করো না" বলে প্রশ্রয় মাখা হাসি হাসে নিতু। বেশি বেশি পেলে আবার খারাপ লাগা শুরু হবে। মেঝো আপার বাড়িতে যাবো, ওদিকটায় চলো। আসিফ মাথা দোলায়, "আবার কবে আসছো?" নিতু বলে, আর আসাআসি নাই। তুমি চাইলে আসতে পারো। মা কাল থেকে মেঝো আপার বাসায়। বাবুর জন্ম হওয়া পর্যন্ত আসা যাওয়া করবে! ইয়াহু বলে চিৎকার করে উঠে আসিফ। কাল সকালেই ফোন করছি তাহলে তোমাকে।
গাড়ি থেকে নামার পাঁচ মিনিটও হয়নি, নিতুর ফোন। আবার কি হলো বলে ফোন ধরে আসিফ। কাঁপা কাঁপা গলায় নিতু বলে, সর্বনাশ হয়ে গেছে আসিফ। আমার বাম কানের দূলটা নেই... আসিফের শরীরে একটা ঝাকুনি লাগে যেনো! বালিশের নিচে, নাকি ঘরের আর কোথাও পড়লো সেটা... আসিফের মাথাটা ঝিমঝিম করছে।
free tips এর ব্লগ


                                          সহজলভ্য কলা

নিম্নমাত্রার ফ্যাট ও উচ্চমাত্রার শক্তিতে ভরপুর কলা। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লুটিন, জিয়াজ্যানথিন নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্টগুলো দেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদানকে ধ্বংস করে। এই উপাদানগুলোর মধ্যে হলো বার্ধক্য দ্রুত আনয়নকারী ও রোগজীবাণু তৈরিকারী উপাদান। বাড়ন্ত শিশু ও অ্যাথলেট বা খেলোয়াড়, নৃত্যশিল্পী বা শারীরিক পরিশ্রম যাঁরা বেশি করেন, তাঁদের জন্য কলা যথাযোগ্য ফল। পাইরিডক্সিন, অর্থাৎ ভিটামিন ‘বি’ সিক্সে ভরপুর কলা। পাইরিডক্সিন স্নায়ু দুর্বলতা, রক্তশূন্যতা, কোমরের ব্যথা কমায়। প্রচুর পরিমাণে রক্ত তৈরি করে কাঁচা কলা। কলাতে বিদ্যমান কপার, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ রক্তের জরুরি অংশ আরবিসির পরিমাণ বাড়ায়। গর্ভবতী, মাতৃদুগ্ধদানকালীন বা সন্তান নিতে ইচ্ছুক সময়ে ফলিক এসিড নামের উপকরণটি ভীষণ জরুরি। কলা, গরু বা ছাগলের কলিজা তাঁদের দেহে বাড়িয়ে দেয় রক্তের মাত্রা। কলার ভিটামিন ‘সি’ ত্বক, চুলকে করে উজ্জ্বল, মসৃণ। এ ছাড়া বড় কোনো অপারেশন বা কোনো কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণের পরে কাঁচা কলার স্যুপ বা কাঁচা কলার পাতলা ঝোলের (অল্প মসলার তরকারি) তরকারি রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথ্য। কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক। দেহের রোগ-প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য জিঙ্ক রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
গাজরের গল্প

গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন। এই বিটা ক্যারোটিন শিশু থেকে বৃদ্ধ—সবার চোখের পুষ্টি জোগায়, চোখের স্নায়ুকে করে শক্তিশালী। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত কচি গাজর খায়, তাদের চোখের অসুখ হয় তুলনামূলক কম। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে গাজরের গুরুত্ব অনেক।
গাজরের রস দেহে চর্বির মাত্রা কমায়। তাই ওজন কমাতে চান এমন ব্যক্তিরা কচি গাজর, কাঁচা পেপে, কচি বাঁধাকপির টুকরা খেতে পারেন ভাত, আলু, রুটির পরিবর্তে। গাজর রক্তের প্রধান উপাদান আরবিসিকে দীর্ঘজীবী করে। এতে রক্তে বেড়ে যায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। রক্ত বাড়াতে হলে তাই প্রতিদিন অন্তত একটি কচি গাজর খান।
লবণ কম খান, দীর্ঘজীবী হোন

প্রতিদিন যে পরিমাণ লবণ খান, তা কিছুটা কমিয়ে দিলে উচ্চরক্তচাপ ও নানা ধরনের হূদেরাগের ঝুঁকি কমতে পারে। এতে আয়ু বেড়ে যাবে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এদকল বিজ্ঞানীর এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাময়িকী হাইপারটেনশন গত সোমবার এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন মার্কিন নাগরিক প্রতিদিন লবণের এক চা-চামচের কিছু পরিমাণ কম খেলে এক দশকের মধ্যে তা কমে ৪০ শতাংশে দাঁড়াবে। এতে দুই লাখ ৮০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ মানুষের উচ্চরক্তচাপ ও হূদেরাগের ঝুঁকি কমে যাবে। তাঁরা দীর্ঘজীবী হবেন।
ভোক্তা পর্যবেক্ষক সংগঠন সেন্টার ফর সায়েন্স ইন দ্য পাবলিক ইন্টারেস্টের নির্বাহী পরিচালক মাইকেল জ্যাকবসন বলেন, এটা নিশ্চিত করে বলা যায় সোডিয়াম খাওয়া কমিয়ে দিলে উচ্চরক্তচাপ ও হূদেরাগসহ নানা রোগের ঝুঁকি কমে যায়। তিনি জানান, গবেষকেরা তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করে পৃথক পদ্ধতি অনুসরণ করে গবেষণা চালিয়ে একই ফল পেয়েছেন।
একজন মার্কিন নাগরিক দিনে যে পরিমাণ খাবার খান তাতে গড়ে তিন হাজার ৬০০ মিলিগ্রাম লবণ থাকে। 
রসুন :
যৌন অক্ষমতার ক্ষেত্রে রসুন খুব ভালো ফল দিয়ে থাকে৷ রসুন কে গরীবের পেনিসিলিন বলা হয়৷ কারণ এটি অ্যান্টিসেপ্টিক এবং immune booster হিসাবে কাজ করে আর এটি অতিঅ সহজলভ্য সব্জী যা আমারা প্রায় প্রতিনিয়্ত খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে থকি৷ আপনার যৌন ইচ্ছা ফিরে আনার ক্ষেত্রে এর ব্যবহার খুবই কার্যকরী৷ কোন রোগের কারণে বা দুর্ঘটনায় আপনার যৌন ইচ্ছা কমে গেলে এটি আপনাকে তা পুনরায় ফিরে পেতে সাহায্য করে৷এছাড়া যদি কোন ব্যক্তির যৌন ইচ্ছা খুব বেশী হয় বা তা মাত্রাতিরিক্ত হয় যার অত্যধিক প্রয়োগ তার নার্ভাস সিস্টেমের ক্ষতি করতে পারে এমন ক্ষেত্রে ও রসুন খুব ই কার্যকরী৷ 
প্রতিদিন দু থেকে তিনটি রসুনের কোয়া কাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খান৷ এতে আপনার যৌন ইচ্ছা কমে গিয়ে থাকলে তা বৃদ্ধি পাবে৷ এ ছাড়া গমের তৈরি রুটির সঙ্গে রসুন মিশিয়ে খেলে তা আপনার শরীরে স্পার্ম উত্পাদনের মাত্রা বাড়ায় এবং সুস্থ স্পার্ম তৈরিতে এটি সাহায্য করে৷

পেঁয়াজ :
কাম-উত্তেজক ও কামনা বৃদ্ধিকারী হিসাবে পেঁয়াজ বহুদিন থেকে ই ব্যবহূত হয়ে আসছে৷ কিন্তু এটি কিভাবে এই বিষয়ে কার্যকরী তা এখন ও পর্যন্ত সঠিক ভাবে জানা যায় নি৷ 
সাদা পেঁয়াজ পিষে নিয়ে তাকে মাখনের মধ্যে ভালো করে ভেঁজে নিয়ে তা প্রতিদিন মধুর সঙ্গে খেলে তা থেকে উপকার পাওয়া যায়৷ কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখবেন, এটি খাওয়ার আগে ঘণ্টা দুয়েক সময় আপনার পেট খালি রাখবেন৷ এইভাবে প্রতিদিন খেলে স্খলন, শীঘ্রপতন বা ঘুমের মধ্যে ধাতুপতন (যাকে এক কথায় spermatorrhea বলা হয়) ইত্যাদি সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব৷ 
এছাড়া পেঁয়াজের রসের সঙ্গে কালো খোসা সমেত বিউলির ডালের গুঁড়ো সাত দিন পর্যন্ত ভিজিয়ে রেখে তাকে শুকিয়ে নিন৷ এঅটির নিয়্মিত ব্যবহার আপনার কাম-উত্তেজনা বজায় রাখবে এবং শারীরিক মিলনকালীন সুদৃঢ়তা বজায় রাখবে৷

Wednesday, July 12, 2017

বাদাম বিক্রি করে খায় এই গরিব ছেলেটি,আর বড় লোকের একটি

FREE TIPS এর পক্ষ থেকে স্বাগতম 

বাদাম বিক্রি করে খায় এই গরিব
ছেলেটি,আর বড় লোকের একটি
মেয়ে তার বাদাম খাওয়ার জন্য
প্রতি দিন তার দোকানে আসে
হঠাৎ একদিন ছেলেটি বললো
মেডাম টাকা
লাগবেনা...মেয়েটি বললো
কেনো ?ছেলেটি বললো
মেডাম এমনি,মেয়েটি হেসে
হেসে বললো আরে বোকা তুমি
টাকানা নিলে খাবে কি ?
ছেলেটি বললো, মেডাম আপনি
বেশ কিছু দিন যাবত আমার
দোকানে আসছেন বাদাম
খাওয়ার জন্য, আপনি যখন থেকে
এই দোকানে বাদাম কিনছেন
তখন থেকে আল্লাহ আমার
ভাগ্যকে বদলে দিতে শুরু
করেছে। আমার ব্যাবসা আগের
চাইতে অনেকবেশি হচ্ছে তাই,
আমি আপনাকে ফ্রি বাদাম
খাওয়াবো !মেয়েটি বললো
তাহলে তুমি যদি বিনিময় কিছু
না নাও তাহলে আমি তুমার
দোকানে আর আসবোনা।
ছেলেটি বললো তাহলে আমি
বিনিময় নিবো কিন্তু আমি যা
চাই তা দিতে হবে।মেয়ে : তুমি
বল কি চাওছেলে : আপনি প্রতি
দিন আমার দোকানে এসে ২
মিনিট দাড়াবেন আর আপনার
সেই ভাগ্যবান হাতে আমার
বাদাম নাড়া দেওয়ার চামুছটা
এক মিনিট ধরে বাদাম নেড়ে
নেরে দিবেন, তাহলে হবে।
মেয়েটি আবারো হাসতে
হাসতে বললো ঠিক আছে আমি
তোমার কথায় রাজি আছি!!!তো
মেয়েটি প্রতি দিন আসে
এভাবে কিছু দিন যাওয়ার পর
হটাৎ ২ দিন ধরে মেয়েটা
আসছেনা।ছেলেটি খোঁজ নিয়ে
দেখে মেয়েটি হসপিটালে
আছে।তার একটা কিডনি
ডেমেঞ্জ হয়ে গেছে।তার পর
দিন ছেলেটিঐ হস্পিটাল
গিয়েছিলো.......তার কিছু দিন
পর মেয়েটি,সুস্থ হয়ে আবার এই
দোকানে বাদাম খেতে
আসলো।ছেলেটি মেয়েটিকে
বললো মেডাম কেমন আছেন?
এতো দিন আসেনাই কেনো ?
মেয়েটি বললো আমি হস্পিটাল
ছিলাম। আমার কিডনি নষ্ট হয়ে
গিয়েছিলো!!ছেলে : তার পর
কি হলো ??মেয়ে: তার পর কে
আমাকে তার কিডনি ধান করলো
আমি তাকে খুজে পাইনি।
ছেলে: তাহলে একটা কাজ
করেন হসপিটালেআপনাকে যেই
নার্স সেবা করেছে সেই নার্স
কে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন, সে
হয়তোবা সব জানে !!!!তখন
মেয়েটি পাগল হয়ে নার্স এর
কাছে গেলো। গিয়ে বললো,
আপনি বলেন আমাকে কিডনি
কে দিলো, না বললে আমি মরে
যাবো। নার্স হেসে হেসে
বললো চলেন আমার সাথে, তখন
নার্স তাকে নিয়ে একটা
রিক্সা করে একটি গরিব মহল্লায়
গেলো, ছোট্ট একটি ঘরে
মেয়েটিকে নিয়েঢুকলো। ছোট্ট
ঘরে ঢুকে মেয়েটি দেখে সেই
বাদাম ওয়ালা ছেলেটি বসে
আছে।মেয়েটি নার্স কে
জিজ্ঞেস করলো আমাকে
কিডনি দিয়েছে কে ?নার্স
বললো এই সেই বাদাম ওয়ালা,
যিনি আপনাকে নিজের কিডনি
দান করেছে ।মেয়েটি কোন
কথা না বলেই ছেলেটিকে
জড়িয়ে ধরে বললো তুমি চাইলে
আমি সারা জীবন
তোমারবাদাম ওয়ালি হয়ে
থাকতে চাই!!!মেয়েটি নার্স কে
বললো যান, এখনি একজন কাজী
ডেকে আনেন প্লিজ,,,,
পোষ্টটি কেমন লাগল?real story
আপনার পেজে মূল্যবান লাইক ও কমেন্ট
দিয়ে জানাতে ভুলবেন না।
আপনার যদি কমেন্ট করতে কষ্ট হয়,
তাহলে সংক্ষেপে কমেন্ট করুন..
পেজে লাইক দিন
T= (Thanks)
N= (Nice)
E= (Excellent)
V= (very fine)
B= (Bad)
O= (Osthir)..
আপনাদের কমেন্ট দেখলে আমরা
ভাল ভাল পোষ্ট দিতে সাহস
পাই।
ভাল ভাল পোষ্ট দিতে সাহস
পাই।
অারো মজার সব গল্প পড়তে এড
দিন
অামি: ভালবাসার লাল গোলাপ
..............ধন্যবাদ..................
..............ধন্যবাদ......
........

Total Pageviews